Header Ads

ধর্ষিতা

ধর্ষিতা

ধর্ষিতা

-----------
মেয়েটার বয়স ১৫ স্কুলের ৯ম শ্রেণীতে পড়ে। মানুষ মরে যাওয়ার পর যেমন নাম হয় "লাশ" তেমনি এখন এই মেয়েটার নাম "ধর্ষিতা".

মেয়েটার বড় ভাইয়া আর ভাবী আজও স্কুলে যাওয়ার সময় চুলের ফিতা টা বেধে দিয়েছিল....
ভাবী নিজের হাতে স্কুল ড্রেস টা ধুয়ে ইস্ত্রি করে পড়িয়ে দিয়েছিল মেয়েটাকে। স্কুলের ড্রেস টা এখন রক্তলাল।

বড় ভাইয়ার ছোট্ট ৪ বছরের ছেলে টা আজ সকালেও মেয়েটাকে ফুপী ফুপী বলে বার বার কোলে উঠেছিল মেয়াটার। এখন ছেলেটা তার মায়ের কোলের আড়ালে দাড়িয়ে। ভীত একটা চোখে তাকিয়ে আছে মেয়েটার দিকে হয়ত চিড়িয়াখানার কোন জন্তুকেও এভাবে কখনও কেউ দেখে নি।

মানুষের জমাট সারা বাড়িময়। দেখছে অর্ধনগ্ন মেয়েটার উদাস চোখের চাহনি টা। মেয়েটার মা জ্ঞান হারিয়েছে। বাবা নির্বাক, এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে খোলা আকাশে। বাবার চোখের মাঝে একটাই প্রশ্ন "বিধাতা, কি পাপ করেছিলাম? এমন শাস্তি দিলে? "

মেয়েটাকে আনা হয় পুলিশ স্টেশনে, কেস করার জন্য। পুলিশ টার চোখেও লোভ স্পষ্ট। পুলিশ টা বার বারই জিজ্ঞেস করে "কি করেছিল? কতক্ষন করেছিল? কিভাবে করেছে? "যেন ক্ষুধা যাচ্ছে না পুলিশটার। যদি একবার মেয়েটাকে খুলে দেখতে পেত হয়ত শান্তি পেত সে, ক্ষুধা মিটত সকল প্রশ্নের।
বড় ভাইকে আর মেয়েটাকে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করার জন্য।
মেয়েটা আর ভাই চলে যায় হাসপাতালে। পুলিশ আধা-খাওয়া সিগারেটে আবার টান দেওয়া শুরু করে, যে সিগারেট টা ধরিয়ে দিয়েছিল ধর্ষকদের মাঝে একজন।

পুলিশের অপূর্ন ইচ্ছা গুলোর স্বাদ মিটিয়ে নেয় ডাক্তার-বাবু। দুই আঙুল দিয়ে চলে কুমারী পরীক্ষা।
মেয়েটা কাঠের পুতুলকেও হার মানায় সেই মূহুর্তে।
.
মেয়েটা বাড়ি আসে। মেয়েটার ঘড়ে মা ছাড়া আর কেউ ঢোকে না, কে জানে হয়ত ঘেন্নায়।
যে বাবা বলত "আম্মাজান, পরীক্ষায় প্রথম হইলে তোমারে কম্পিউটার কিইন্না দিমু" সেই বাবা আজ খোজ নেয়না মেয়েটা খেয়েছে কিনা।

ভাইয়ের ছেলেটা কোন ভাবে মেয়েটাকে দেখলে লুকিয়ে পড়ে। এখন সে আর ফুপীর কাছে চকলেটের
আবদার করে না। মেয়েটার ৯০ বয়সি বৃদ্ধা দাদী যে হয়ত কিছুদিনের মাঝেই চলে যাবে ওপারে, সেও মেয়েটাকে দেখলে মুখ বাকিয়ে বলে ওঠে "গলায় দড়ি দিতে পারিস না?? " পাশের বাড়ির কাকী, যে কখনও অসুখ করলেও দেখতে আসত না আজ সে তিনবেলা নিয়ম করে আসে, কাকী একা আসে না সাথে আরো ২-৩ জন করে নিয়ে আসে "ধর্ষিতা" নামক মেয়েটাকে দেখানোর জন্য।

আজ মেয়েটার বাড়িতে অনেক মানুষ এসেছে আবার মেয়েটাকে শেষ বারের জন্য দেখতে। জানাজাতে অবশ্য বেশি মানুষ আসে নি। আত্মহত্যা করা মানুষের জানাজা তে কেই বা আসতে চায়?.

যে মেয়েটা আজ আত্মহত্যা করল সে কারো বোন, কারো মেয়ে, কারো ফুপী কারো আত্মীয়।

ধর্ষকরা তো শুধু মেয়েটাকে গৃহবন্দি করল। কিন্তু মেয়ে টাকে খুন করলাম তো আমি আপনি আপনারা।
মেয়েটা কি চেয়েছিল? সহানুভূতি? সুন্দর ব্যবহার? একটু আশা দেখানোর মানুষ?

আচ্ছা খুব দামী কিছু তো চায়নি, কিন্তু আমাদের ব্যর্থতা, আমরা তাকে দিতে পারিনি। দিয়েছি শুধুই অপমান।

আজ সে ধর্ষিত হয়েছে, কাল ও ধর্ষিত হয়েছে। বলা যায়, কাল আপনার বোন, আপনার মেয়ে, আপনার ভাগ্নি, আপনার ভাস্তি, আপনার মা ও হতে পারে পত্রিকার শিরোনাম। আমি সকল ধর্ষকের উন্মুক্ত শাস্তি
দেখতে চাই তাদের মুন্ডুছেদ দেখতে চাই। আর একটু সহানুভূতি দিতে চাই, একটু আশা দিতে চাই ঐ মেয়েগুলোকে।

1 comment:

কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্য আমাদের জানান। এখানে আপনার মন্তব্য করুন

Powered by Blogger.