Header Ads

নামাজের গুরুত্ব ।। বাংলা ডি অনলাইন

নামাজের গুরুত্ব ।। বাংলা ডি অনলাইন The importance of prayer. Bangla D Online 


আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনুল কারিমে এরশাদ করেন মুমিনদের প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত নামায সুনির্ধারিত সময়ে আদায় করা ফরজ করা হয়েছে।

ইসলামের প্রতিটি বিধান আমলের মধ্যেই যৌক্তিকতা সৌন্দর্য নিহিত রয়েছে। ইসলামে এমন কোনো আমল নেই, যা মুসলমানের জন্য পালন করা কষ্টকর। ইসলামে পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে

১। এ কথায় সাক্ষ্য দেয়া (স্বীকারোক্তি করা) যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসূল।

২। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রতিষ্ঠা করা।

৩। সম্পদের যাকাত আদায় করা।

৪। হজ্জব্রত পালন করা।

৫। রমজান মাসে রোজা রাখা।

এই পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে নামাজ এবং রোজা ধনী-দরিদ্র সবার জন্যই ফরজ। তবে হজ্জ যাকাতের বিধান শুধু ধনী ব্যক্তিদের জন্য ফরজ। শারীরিক অসুস্থতাসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফরজ রোজা ভঙ্গ করার হুকুম রয়েছে এবং পরে তা আদায় করে নেওয়া যায়। রোজা ভঙ্গের পর অক্ষম ব্যক্তি ফকির, মিসকিনকে পেট ভরে খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে রোজার কাফফারা আদায় করতে পারবেনএই রকম বিধানও ইসলামে রয়েছে। তবে নামাজের ক্ষেত্রে কাজা করার হুকুম শুধু বিশেষ ক্ষেত্রেই দেওয়া হয়েছে এবং নামাজের কোন কাফফারা বা বদলা হয় না। বলা হয়েছে, যদি পানির অভাবে নামাজ কাজা হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সে যেন তায়াম্মুম করে নামাজ আদায় করে। যদি কোনো ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে না পারে, সে যেন বসে বসে নামাজ আদায় করে নেয়। যদি কারো বসে নামাজ পড়তে কষ্ট হয়, সে যেন শুয়ে নামাজ আদায় করে। এমনকি চোখের ইশারায় নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে।

দেহে জ্ঞান থাকা পর্যন্ত কোনো অবস্থায় কোনো ব্যক্তির জন্য নামাজ না পড়ার বা বাদ দেওয়ার বিধান নেই। জ্ঞানসম্পন্ন অসুস্থ অবস্থায়ও নামাজ আদায় করতে হবে। অর্থাৎ ইসলামে সুস্থ ব্যক্তির জন্য যেমন নামাজের নিয়ম ঠিক করে দেওয়া হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে অসুস্থ ব্যক্তির নামাজের ব্যাপারেও রয়েছে কিছু নিয়মনীতি। প্রতিটি মুমিন মুসলমানের জন্য ইমান গ্রহণের পর প্রথম প্রধান ইবাদত নামাজ। নামাজের জন্য কিছু নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে এবং সে অনুযায়ী যথাসময়ে নামাজ আদায় করাও জরুরি। কেননা, পরকালে সব মুসলমানের কাছে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। যে ব্যক্তির নামাজের হিসাব দিতে সহজ হবে, তাঁর পরবর্তী সব হিসাব সহজ হয়ে যাবে।

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আস (রা.) হযরত রাসুলে পাক (সা.) হতে বর্ননা করেন, হযরত রাসূলে পাক (সা.) একদা নামাজ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন- যে ব্যক্তি নামাজের হেফাজত করবে কিয়ামতের দিন নামাজ তার জন্য নূর, প্রমান ও মুক্তির উপায় হবে। আর যে ব্যক্তি নামাজের হেফাজত করবে না তার জন্য নামাজ আলো, প্রমান ও ‍মুক্তির উপায় হবে না। কিয়ামতের দিন সে কারুন, ফেরাআউন, হামাম ও উবঈ বিন খালফের সঙ্গী হবে। (আহমদ ও বায়হাকী শরীফ)

হযরত উবাদাহ বিন সাবিত (রা.) হতে বর্নিত, তিনি বলেন-হযরত রাসূলে পাক (সা.) এরশাদ করেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আল্লাহ পাক ফরজ করেছেন, যে ব্যক্তি নামাজের জন্য উত্তমরূপে অজু করবে এবং যথাসময়ে নামাজ আদায় করবে এবং নামাজের রুকু ও খুশু পূর্নরূপে আদয় করবে তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আল্লাহ পাকের উপর রয়েছে। আর যে ব্যক্তি ঐ রকম করবে না তার জন্য আল্লাহ পাকের কোন প্রতিশ্রুতি নেই। ইচ্ছা করলে তিনি ক্ষমা করবেন আর ইচ্ছা করলে তিনি তাকে শাস্তি দিবেন। (আহমদ ও আবু দাউদ শরীফ)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্নিত, তিনি বলেন- হযরত রাসূলে পাক (সা.) এরশাদ করেন, আচ্ছা বল তো, যদি তোমাদের কারো দরজায় একটি নহর (নদী) থাকে যাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে তার শরীরে কি কোন প্রকারের ময়লা অবশিষ্ট থাকবে? তারা উত্তর দিলেন, তার শরীরে কোন প্রকার ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না। রাসূল কারীম (সা.) বললেন অনুরূপ অবস্থায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বদৌলতে আল্লাহ পাক নামাজীর সমস্ত গুনাহ মিটিয়ে দিবেন। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)।

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে- যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথারীতি আদায় করবে আল্লাহ পাক তাকে পাঁচটি মর্যাদার অধিকারী করবেন।

১। মৃত্যু যন্ত্রনা দূর করবেন।

২। কবরের শাস্তি হতে মুক্তি দিবেন।

৩। কিয়ামতের দিন ডান হাতে আমলনামা দান করবেন।

৪। বিজলীর ন্যায় পুলছীরাত অতিক্রম করবেন।

৫। আল্লাহ তাকে চিরস্থায়ী জান্নাত দান করবেন।

নামাজ আদায়ে দায়সারা ভাব দেখানো মোটেই উচিত নয়। প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘সেই সব মুমিন সফলকাম, যারা তাদের নামাজে বিনয়অবনত থাকে। প্রতিদিন সিজদা দিয়ে বান্দা এটিই প্রমাণ করে যে, সে একমাত্র আল্লাহর কাছেই আত্মসমর্পণ করেছে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো আনুগত্য করে না। একমাত্র নামাজের মাধ্যমেই মহান রবের কাছাকাছি আসা যায়। একমাত্র নামাজের মাধ্যমেই বান্দা তার প্রভুর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পায়। ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হচ্ছে কোনো দালাল ছাড়াই সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে বান্দা নামাজের মাধ্যমে সাক্ষাৎ করতে পারে এবং নিজের জন্য সাহায্য কামনা করতে পারে। প্রসঙ্গে সূরা বাকারার ১৫৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য্য সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো।

নামাজের মধ্যে অন্যতম একটি সৌন্দর্য হচ্ছে, নামাজের সময় সব ভেদাভেদ ভুলে সবাই একই কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে। সবাই আল্লাহর কর্তৃত্বের কাছে প্রকাশ্যে মাথা নত করে। এটিই নামাজের আসল সৌন্দর্যের প্রতিফলন।

ইসলামের বাংলার প্রত্যেকটি পোস্ট ইসলামের দাওয়াতের এক একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা আপনিও যদি ইসলামের এই দাওয়াতী কাজে অংশ গ্রহন করতে চান তাহলে এই পোস্টটি শেয়ার করুন।

No comments

কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্য আমাদের জানান। এখানে আপনার মন্তব্য করুন

Powered by Blogger.