পুলিশ নিয়োগ -২০২২।। Police Recruitment-2022
অবশেষে নতুন নিয়মে ১০ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আবেদন চলবে আগামী ৭ অক্টোবর বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি)
পদে নিয়োগের লক্ষ্যে জেলাভিত্তিক শূন্যপদের বিবরণ বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
নিয়োগের বয়সসীমা ১৮ থেকে ২০ বছর
নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব প্রার্থীর বয়স ৭ অক্টোবর ২০২১ তারিখে বর্ণিত
বয়সসীমার (১৮-২০) মধ্যে থাকবে, তারা আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে ২৫ মার্চ
২০২০ তারিখে যারা সর্বোচ্চ বয়সসীমায় পৌঁছেছেন তারাও আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
এক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য কোটার জন্য বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তিতে
এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উর্ত্তীণ (কমপক্ষে জিপিএ ২.৫/সমমান)। এছাড়া প্রার্থীকে
অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুধুমাত্র অনলাইনে
আবেদন করা যাবে। সব প্রার্থীকে মাস্ক পরে পুলিশ লাইন্স মাঠে উপস্থিত হতে হবে। জনসমাগম
এড়ানোর লক্ষ্যে অভিভাকদের পুলিশ লাইন্স মাঠে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং শরীরের তাপমাত্রা
স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে প্রার্থীকে মাঠে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
এতে মোট দাগে বলা হয়, ট্রেইনি রিক্রুট
কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেনে জড়িত হলে গ্রেফতার
ও নিয়োগ বাতিল করা হবে।
২০২০ সালের শেষদিকে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া
শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও যোগ্যতা সংক্রান্ত কিছু মানদণ্ড
নির্ধারণের কারণে তা পিছিয়ে যায়। এরপর এ নিয়োগ প্রক্রিয়া চলতি বছরের জুন ও জুলাইয়ে
শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দেশে করোনার ঊর্ধ্বগতির ফলে তা আবারও পিছিয়ে যায়।
নতুন নিয়মের পরীক্ষার ধাপগুলো হচ্ছে-
প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং, শারীরিক মাপ ও ফিজিক্যাল অ্যান্ডুরেন্স টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা,
মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা, প্রাথমিক নির্বাচন, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা
এবং চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্তকরণ।
আবেদনকারীরা প্রথমে police.teletalk.com.bd-এ লগইন করে আবেদন ফরম পূরণ করতে
হবে। ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়েববেজড স্ক্যানিং করা হবে। আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে
একটি এসএমএস করা হবে।
এসএমএসে নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েব পোর্টালে
লগইন করার জন্য ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। সেই পোর্টালে লগইন করে আবেদনকারীকে
নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে হবে। প্রবেশপত্র প্রিন্ট করে নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিটি
ধাপে অংশগ্রহণ করতে হবে।
পুলিশ সূত্র জানায়, অনলাইনে আবেদনের
জন্য (police.teletalk.com.bd)
সাইটে যেতে হবে। আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণের জন্য সেখানে সহায়ক হিসেবে নির্দেশিকা ও
ভিডিও টিউটোরিয়াল দেওয়া আছে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত
আবেদন করা যাবে। বাছাইকৃত প্রার্থীদের আবেদনপত্রে উল্লেখ করা মোবাইল ফোন নম্বরে এসএমএস
করে নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের নিজ জেলার সংশ্নিষ্ট
পুলিশ লাইন্স ময়দানে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত তারিখে সকাল ৯টায় শারীরিক মাপ ও পরীক্ষার
জন্য উপস্থিত থাকতে হবে। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেনে জড়িত হলে
গ্রেপ্তার ও নিয়োগ বাতিল করা হবে।
নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর দিন প্রার্থীদের
পুলিশের নির্ধারিত স্কেলে বুকের মাপ ও ওজন-উচ্চতা নেওয়া হবে। এরপর প্রার্থীর প্রয়োজনীয়
কাগজপত্র যাচাই করে তাকে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে তার ফরমে
একটি সিল দেওয়া হবে।
পরবর্তী
ধাপে অনুষ্ঠিত হবে শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা। এ পরীক্ষার আগে প্রার্থীকে ইনডেমনিটির
ঘোষণাপত্র নামে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমে ওই প্রার্থী শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ
আছে বলে ঘোষণা দিয়ে স্বাক্ষর করবেন।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য ধাপে
ধাপে সাতটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে হবে। সেগুলো হচ্ছে- দৌড়, পুশ আপ, লং জাম্প, হাই জাম্প,
ড্র্যাগিং ও রোপ ক্লাইমিং। এই ধাপের কোনো একটিতে অকৃতকার্য হলে পরবর্তী ধাপের পরীক্ষায়
অংশ নেওয়া যাবে না এবং সেখানেই তার পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের ষষ্ঠ ধাপে
রয়েছে ড্র্যাগিং পরীক্ষা। এই ধাপে পুরুষ প্রার্থীদের ১৫০ পাউন্ডের টায়ারকে টেনে ৩০
ফুট দূরত্ব ও নারী প্রার্থীদের ১১০ পাউন্ড ওজনের টায়ার ২০ ফুট দূরত্বে আনতে হবে। এছাড়াও
রোপ ক্লাইমিং পরীক্ষায় পুরুষদের ১২ ফিট এবং নারীদের ৮ ফিট দড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হবে।
শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায়
উত্তীর্ণদের সব ডকুমেন্ট নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা,
ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে ৪৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। লিখিত পরীক্ষায়
উত্তীর্ণদের ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এরপর লিখিত,
মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষার পর উত্তীর্ণদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা
করা হবে। সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে দুই লাখ
১০ হাজারের মতো ফোর্স রয়েছে। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধাপে ধাপে আরও ৫০
হাজার পুলিশ নিয়োগের নির্দেশনা দেন।
বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট
কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ১০ হাজার জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে সাড়ে আট হাজার পুরুষ
ও দেড় হাজার নারী। আগ্রহীরা আজ শুক্রবার থেকে আগামী ৭ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন
করতে পারবেন।
জানা গেছে, কনস্টেবল পদে আবেদন করতে হলে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নূ্যনতম জিপিএ ২.৫ সহ এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। পাশাপাশি থাকতে হবে শারীরিক যোগ্যতাও। শারীরিক যোগ্যতা হিসেবে সাধারণ ও অন্যান্য কোটার পুরুষ প্রার্থীদের উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং নারী প্রার্থীদের ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হতে হবে। বুকের মাপ পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি হতে হবে। বয়স হতে হবে চলতি বছরের ৭ অক্টোবরে ১৮ থেকে ২০ বছর। মুক্তিযোদ্ধা ও উপজাতীয় কোটার ক্ষেত্রে শারীরিক যোগ্যতা ও বয়সের ভিন্নতা রয়েছে। প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক ও অবিবাহিত হতে হবে।
No comments
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্য আমাদের জানান। এখানে আপনার মন্তব্য করুন