রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ ।। বাংলা ডি অনলাইন ।। bangladonline
تَتَّقُونَ لَعَلَّكُمْ قَبْلِكُمْ مِن الَّذِينَ ى عَلَ كُتِبَ كَمَا الصِّيَامُ عَلَيْكُمُ كُتِبَ ءَامَنُوا الَّذِينَ يٰٓأَيُّهَا
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্যে রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীগণদের উপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া বা আল্লাহ ভীরুতা অবলম্বন করতে পারো। (সূরা বাকারাহ-১৮৩)
ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে সিয়াম বা রোজা অন্যতম
একটি স্তম্ভ। হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ তায়ালা রোজার প্রতিদান নিজ হাতে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ইসলামি বর্ষপঞ্জির ৯ম মাস এবং ইসলাম ধর্মমতে সবচেয়ে পবিত্রতম মাস এটি। এই মাসে মুসলমানগণ ধর্ম চর্চার অংশ হিসেবে ভোর থেকে সুর্যাস্তের পর পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার ও যৌনক্রিয়াদি বর্জন করে থাকেন। একে আরবীতে 'সিয়াম' বলে; বাংলাদেশে যা মুলতঃ ``রোযা’’ বলে পরিচিত।
হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সো:) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও পর্যালোচনাসহ রমজান মাসের সিয়াম পালন করবে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুণাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহীহ বুখারী: ৩৮, সহীহ মুসলিম: ৭৬০)
আল্লাহ্ পাক রাব্বুল আলামীন সকল মুসমানের
উপর রোজা ফরজ করেছেন রোজা শুধু রাখলেই হবে না এই রোজা ভঙ্গের ও কিছু কারন আছে যে কাজ
গুলো করলে আপনার রোজা ভেঙ্গে যেতে পারে বা শেষ হয়ে যেতে পারে তাই এই বিষয় গুলো আমাদের
জানা একান্ত আবাশ্যক। রোজা ভঙ্গের কারন গুলো যদি আমরা না জানি তাহলে আমরা বুঝতে পারবো
না আমাদের রোজা কি ভাবে ভঙ্গ হলো বা ভেঙ্গে গেলো তাই এই বিষয়গুলো প্রত্যেক রোজাদারের
জানা একান্ত জরুরী। তাই আমরা আজকে আলোচনা করবো রোজা ভঙ্গের কারন সমূহ নিয়ে রোজা ভঙ্গের
কারন সমূহ নিম্নরূপঃ-
স্ত্রী সহবাস করা
পানাহার করা
এমন কিছু যা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত
ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা
মহিলাদের হায়েয ও নিফাসের কারণে রক্ত বের হওয়া
হস্তমৈথুন করা
শিঙ্গা লাগানো বা এমন জাতীয় কোন কাজ করার কারণে রক্ত বের করা
Wife intercourse
To eat and drink
Something that replaces eating and drinking
Intentional vomiting
Bleeding due to menstruation and breathing in women
Masturbate
Bleeding due to blowing horns or doing any such thing
স্ত্রী সহবাস
করা
রোজা ভঙ্গের কারণ গুলোর মধ্যে সর্ব প্রথম হচ্ছে স্ত্রী সহবাস করা রোজা ভঙ্গের কারণ গুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় এতে লিপ্ত হলে সবচেয়ে বেশি গুনাহ হয়।
যে রোজাদার ব্যক্তি রমযান মাসে দিনের বেলা ইচ্ছেকৃত ভাবে স্ত্রী সহবাস করবে অর্থাৎ দুই খতনার স্থানদ্বয়ের মিলন ঘটাবে এবং পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ লজ্জাস্থানের ভেতরে অদৃশ্য হয়ে যাবে সে তার রোযা নষ্ট করল|
এতে করে বীর্যপাত হোক আর না হোক। রোজাদার ব্যাক্তির উপর তওবা করা, সেদিনের রোযা সম্পূর্ণ করা,এবং পরবর্তীতে এ দিনের রোযা কাযা আদায় করতে হবে এবং কঠিন কাফফারা আদায় করতে হবে।
পানাহার করা
পানাহার বলতে বুঝানো হয়েছে — মুখ, কান, নাখ দিয়ে এমন কোন কিছু প্রবেশ করানো যা পাকস্থলীতে পৌঁছে তা পানাহারের অন্তর্ভুক্ত।
এ কারণে আল্লাহর নবী রাসূল ( সা.) বলেছেন:
“তুমি ভাল করে নাকে পানি দাও; যদি না তুমি রোযাদার হও।”[সুনানে তিরমিযি (৭৮৮)
এমন কিছু
যা
পানাহারের
স্থলাভিষিক্ত
পানাহারের স্থলাভিষিক্ত বলতে এমন বিষয়কে বোঝানো হয়,যা পানাহারের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হয়,যেমন শরীরে রক্ত নেওয়া, বা শরীরের ক্লান্তি দূরকরার জন্য স্যালাইন নেওয়া ইত্যাদি,
কিন্তু প্রয়োজনের জারণে যেসব ইনজেকশন পানাহারের স্থলাভিষিক্ত নয়; বরং চিকিৎসার জন্য দেয়া হয় যেমন:ইনসুলিন, পেনেসিলিন কিংবা শরীর চাঙ্গা করার জন্য দেয়া হয় কিংবা টীকা হিসেবে দেয়া হয় এগুলো রোযা ভঙ্গ করবে না
ইচ্ছাকৃতভাবে বমি
করা
ইচ্ছাকৃত বমি করলে, অর্থাৎ পেটে থেকে খাওয়া খাদ্য (বমন ও উদ্গিরণ করে) বের করে দিলে, মুখে আঙ্গুল ভরে, পেট নিঙ্রে, কোন বিকট দুর্গন্ধ জাতীয় কিছুর ঘ্রাণ নাকে নিয়ে, অথবা অরুচিকর ঘৃণ্য কিছু দেখে উল্টি করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে ঐ রোযার কাযা জরুরী। পক্ষান্তরে সামলাতে না পেরে অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হয়ে গেলে রোযা নষ্ট হয় না। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘রোযা অবস্থায় যে ব্যক্তি বমনকে দমন করতে সক্ষম হয় না, তার জন্য কাযা নেই। পক্ষান্তরে যে ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, সে যেন ঐ রোযা কাযা করে।
ঢেকুর তুলতে গিয়ে যদি রোযাদারের গলাতে কিছু খাবার উঠে আসে অথবা খাবারের স্বাদ গলাতে অনুভব করে এবং তারপরেই ঢোক গিলে নেয়, তাহলে তাতে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। কারণ, তা আসলে মুখ পর্যন্ত বের হয়ে আসে না। বরং গলা পর্যন্ত এসেই পুনরায় তা পেটে নেমে যায় এবং রোযাদার কেবল নিজ গলাতে তার স্বাদ অনুভব করে থাকে।
মহিলাদের হায়েয
ও
নিফাসের
কারণে
রক্ত
বের
হওয়া
মহিলাদের হায়েয ও নিফাসের রক্ত নির্গত হলে রোজা নষ্ট হয়ে যায় । আল্লাহর নবী রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন :
“যখন মহিলাদের হায়েয হয় তখন কি তারা নামায ও রোযা ত্যাগ করে না!?[সহিহ বুখারী (৩০৪)]
তাই কোন মহিলার হায়েয কিংবা নিফাসের রক্ত বের হওয়া শুরু হলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে; এমনকি সেটা যদি ইফতারের সামান্য কিছু সময় পূর্বে হলেও।
আর কোন মহিলা যদি অনুভব করে যে, তার হায়েয শুরু হতে যাচ্ছে; কিন্তু ইফতারের আগে পর্যন্ত রক্ত বের হয়নি তাহলে তার রোযা শুদ্ধ হবে এবং সেদিনের রোযা তাকে আর কাযা আদায়
করতে হবে না।
আর কোনো মহিলার হায়েয ও নিফাসের রক্ত যদি রাত থাকতে বন্ধ হয়ে যায় এবং সাথে সাথে তিনি রোযার নিয়ত করে নেন; তবে গোসল করার পূর্বেই ফজর হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আলেমদের মাযহাব হচ্ছে— তার রোযা শুদ্ধ হবে।
হস্তমৈথুন করা
হস্তমৈথুন বলতে বুঝায় ইচ্ছেকৃত ভাবে হাত দিয়ে কিংবা অন্য কিছু দিয়ে বীর্যপাত ঘটানো । হস্তমৈথুন যে রোজা ভঙ্গের কারণ এর দলিল হচ্ছে- হাদিসে কুদসীতে রোযাদার সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন :
সে আমার কারণে পানাহার ও যৌনকর্ম পরিহার করে
সুতরাং যে রোজাদার ব্যক্তি রমযান মাসে দিনের বেলা হস্তমৈথুন করবে তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং তার উপর ফরয হচ্ছে তওবা করা, সে দিনের বাকী সময় রোজা রাখা এবং পরবর্তীতে সে রোযাটি কাযা আদায় করা।
আর যদি এমন হয় যে হস্তমৈথুন শুরু করেছে কিন্তু বীর্যপাতের পূর্বে সে তা থেকে বিরত হয়ে গেছে তাহলে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে; তার রোযা হয়ে যাবে । বীর্যপাত না করার কারণে তার রোজাটি কাযা আদায় করতে হবেনা
শিঙ্গা লাগানো
বা
এমন
জাতীয়
কোন
কাজ
করার
কারণে
রক্ত
বের
করা
শিঙ্গা লাগানো বা দেহ থেকে রক্ত বের করা এমন জাতীয় কোন কাজ করা শারীরিক কারণে যদি কেউ রোজা থাকা অবস্থায় সিংগা গ্রহণ করে এবং দেহ থেকে রক্ত বের করে তাহলে ঐ দিনের রোযা
ভঙ্গ হয়ে যাবে। এবং ওই দিনে রোজার
জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে তওবা চেয়ে নিতে হবে এবং পরবর্তী সময়ে এই রোজার কাজা
রোজা আদায় করে নিতে হবে।
উপরোক্ত কাজ গুলোর মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ
হয়ে থাকে তাই আমাদের উপরোক্ত কাজগুলো থেকে বিরত থাকা উচিৎ রোজা অবস্থায় । তাই সকল রোজাদারের
খেয়াল রাখতে হবে রোজা অবস্থায় তার ধারা জানো উপরোক্ত কাজগুলো না হয় আর যদি হয়ে যায়
তাহরে তাকে রোজা কাযা করতে হবে।
No comments
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্য আমাদের জানান। এখানে আপনার মন্তব্য করুন